
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন এর ৫০ তম দিবস উপলক্ষে খোকসা-কুমারখালীর সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রউফ জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
১০ জানুয়ারি সকাল ৯ টায় বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন এর অর্ধশত বছরের এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রউফ বলেন, ২৫শে মার্চ কালরাতে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ এবং বঙ্গবন্ধুকে নিরাপদ অবস্থানে নিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে জাতির পিতা ১৯৭২ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি মার্কিন সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্টকে বলেছিলেন, “পাকিস্তানের কমান্ডো বাহিনী সে রাতে আমার বাড়ি ঘিরে রেখেছিল। তারা আমাকে মেরে ফেলত যদি আমি বাড়ির বাইরে আসতাম। মেরে ফেলার পর বলত চরমপন্থিরা আমাকে খুন করেছে। আমাকে মেরে ফেলার অজুহাতে ইহাহিয়া খান আমার দেশের মানুষকে খুন করত। তারা হত্যাযজ্ঞ চালাত।”
আরও পড়ুন
বস্তুত কথা যথার্থই। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা, পরিস্থিতি মোকাবেলার অপরিমেয় ক্ষমতা-সর্বোপরি দেশের মানুষের প্রতি অতলান্ত ভালোবাসাই তাকে সুবিশাল উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে। তিনি ছিলেন রাজনীতির দ্রষ্টা, তার অতুলনীয় সাহস, মৃত্যুঝুঁকি নেয়ার দুর্লভ যোগ্যতার কারণে বঙ্গবন্ধু একক এবং অদ্ধিতীয়।
অন্যত্র সাক্ষাৎকারে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, “আমাকে যদি ইয়াহিয়া খান না-পায়, তাহলে তারা সারা ঢাকা শহরে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেবে”। একজন মানুষও অবশিষ্ট রাখবে না। তাই তিনি সতীর্থদের নিরাপদ অবস্থানে পাঠিয়ে দিয়ে নিজেই মৃত্যুকূপে ঝাঁপিয়ে পড়লেন।
পরাধীনতার নাগপাশ, উপনিবেশিকতা বা স্বৈরশাসন থেকে দেশকে মুক্ত করেছেন, শারীরিক অনুপস্থিতি সত্ত্বেও এমন মহানায়কদের মধ্যে যারা দূরে অবস্থান করেছেন, তাদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু বিশেষত্ব হলো- তিনি প্রতিটি মুহূর্তেই মৃত্যুর কাছ থেকে চুল পরিমাণ দূরত্বে ছিলেন।
তার বন্দিশালার সামনেই খোঁড়া হয়েছিল কবর। পূর্বেও তিনি পাষাণ করার অন্ধকারে বন্দিত্ব বরণ করেছিলেন ১৪ বছর। পাকিস্তানের প্রত্যন্ত সামরিক ছাউনি মিয়াওয়ালির একটি কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠ থেকে তিনি দৃঢ়ভাবে উচ্চারণ করেছিলেন, “আমি জাতিতে বাঙালি, ধর্মে মুসলমান। আর মুসলমান একবারই মরে।”
তিনি শুধু অনুরোধ করেছিলেন, লাশটি যেন তার দেশ ও জাতিকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় এবং তাকে বাংলাদেশে সমাধিস্থ করা হয়। অনমনীয় মানসিক দৃঢ়তায় তিনি সমঝোতার বিনিময়ে মৃত্যু থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার প্রলোভন অগ্রাহ্য করে প্রতিনিয়ত পবিত্র কোরআন পাঠে নিমগ্ন ছিলেন।
এবছরই বাঙালি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ পালন করলো। উদযাপন করলো স্বাধীনতা ও বিজয়ের সুবর্ণ-বছর। এরকমই মহিমান্বিত বাঙালি জাতির মহান স্মারক জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন। এতেই অর্জিত হয় মুক্তিযুদ্ধের পূর্ণাঙ্গ বিজয়।
কেননা তখন বঙ্গবন্ধু কেবল একটি শরীরী সত্তা নয়, একটা নবোত্থিত জাতির পরিচিতি ও অস্তিত্বের সমার্থক- যার সঙ্গে বাংলা ও বাঙালি একীভূত।
বঙ্গবন্ধুর এই মহান ও ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ এই অর্থে যে, একটি পরাধীন জাতি যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করলো, অথচ সেই যুদ্ধে তিনি অনুপস্থিতিতেই ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান-সুপ্রিম কমান্ডার অব দ্য আর্মন্ড ফোর্সেস। হাজার মাইল দূল থেকেই ছিল তার দিব্য ও দিব্যি উপস্থিতি। তিনিই ছিলেন রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র স্বাধীনতা যুদ্ধের মূর্তিমান প্রতীক। অনুপ্রেরণার উৎস।
বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতন্ত্র ও সুশাসনের ভিত সুদৃঢ় করেছে। শেখ হাসিনার রূপকল্প-৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমেই বঙ্গবন্ধুর প্রার্থিত ও স্বপ্নের সোনার বাংলা নিশ্চয়ই প্রতিষ্ঠিত হবে।
এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।