spot_img
রবিবার, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪
29 C
Bangladesh
রবিবার, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪
রবিবার, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪
spot_img
আরও
    DinBartaইতিহাস ও ঐতিহ্যবিমানের পিতা আব্বাস ইবনে ফিরনাস
    spot_imgspot_img

    বিমানের পিতা আব্বাস ইবনে ফিরনাস

    আব্বাস ইবনে ফিরনাস ছিলেন একজন জোতির্বিদ, আবিষ্কারক, চিকিৎসক, আরবি সাহিত্যের কবি এবং আন্দালুসিয় সুরকার। তিনি ছিলেন, বার্বার বংশদ্ভূত আন্দালুসিয় মুসলিম পলিমেথ বা বহুশাস্ত্রবিশারদ। পুরো নাম আব্বাস আবু আলকাসিম ইবনে ফিরনাস ইবনে ইরদাস আল তাকুরিনি। তিনিই পৃথিবীতে প্রথম উড়ার চেষ্টা করেছিলেন। তাকে বলা হয় বিমানের পিতা।

    আব্বাস ইবনে ফিরনাসের জম্মস্থান ছিল স্পেনের রোনদায়। রোনদা এখন স্পেনের একটি পর্যটন শহর। তিনি যদিও রোনদায় জন্মগ্রহণ করেন, কিন্তু জ্ঞানের প্রতি তার আসক্তি থেকে; ইবনে ফিরনাস কর্ডোবায় চলে যান। তবে তার আগে তিনি কিছু সময় ইরাকে ছিলেন। তখন বাগদাদের দারুল হিকমাহ ছিল মুসলিম জ্ঞানপিপাসুদের তীর্থস্থান। তিনি সেখানে বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান আহরণ করে আবার কর্ডোবায় ফিরে আসেন।

    যুক্তরাষ্ট্র সর্বপ্রথম যান্ত্রিক উড়োজাহাজ আবিষ্কার করলেও তারও অনেক আগে নবম শতাব্দীর বিজ্ঞানী আব্বাস ইবনে ফিরনাস প্রথম মানুষ যিনি এক জোড়া পাখা নিয়ে আকাশে উড়েছিলেন। তার পাখাগুলো তৈরি করা হয়েছিল রেশম, কাঠ ও পাখির পালক দিয়ে।

    লিওনার্দো দা ভিঞ্চি“র (flying machine) নকশাগুলি তৈরি করার ৬০০ বছর পূর্বে এবং রাইট ব্রাদার্সের বিখ্যাত বিমান চালানোর ১০০০ বছরেরও আগে, ইবনে ফিরনাস কাজটি করেছিলেন।

    আব্বাস ইবনে ফিরনাসের ভাস্কর্য 1
    আব্বাস ইবনে ফিরনাসের এই ভাস্কর্যটা আছে বাগদাদের এয়ারপোর্টের সামনে।

    ঐতিহাসিকদের মতে, ইবনে ফিরনাসের বয়স যখন ৬৫ থেকে ৭০ সে সময় তিনি ইয়েমেনের জাবাল আল আরুস পর্বতের চূড়া থেকে উড়াল দেন। দশ মিনিটের মতো তিনি আকাশে ভেসে থেকে ছিলেন।

    ইবনে ফিরনাস ওড়ার কারিগরি বিষয়গুলো ঠিক ভাবে সম্পাদন করলেও ল্যান্ডিংয়ের বিষয়টিতে গুরুত্ব দেননি। যে কারণে ওড়ার সময় তিনি ভারসাম্য রাখতে পারেননি। বৈপ্লবিক ওই উড্ডয়নের সমাপ্তি হয়েছিল ক্রাশ ল্যান্ডিংয়ের মাধ্যমে।

    ওই উড্ডয়নের পরও ১২ বছর বেঁচে ছিলেন ইবনে ফিরনাস।

    পি. কে. হিট্টি” তার হিস্ট্রি অব আরব বইতে লিখেছেন, “আবু আল কাসিম জাহরাবীর পর স্পেনে প্রাচ্য সংগীত জনপ্রিয় করার পেছনে ইবনে ফিরনাসের অনবদ্য ভূমিকা ছিল। তার উদ্ভাবন গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে পাথর থেকে গ্লাস তৈরি। তিনি একটি সৌরমডেলও তৈরি করেছিলেন, যেখানে নক্ষত্র, মেঘ, এমনকি বজ্রপাতের অবস্থাও দেখানো হয়েছিল।

    “ইবনে ফিরনাস, “আল-মাকাতা” নামক জলঘড়ির উদ্ভাবন করেছিলেন। প্ল্যানিস্ফিয়ার নামক যন্ত্র ও পাঠের উপযোগী লেন্সও প্রস্তুত করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তার বাসস্থানের একটি কক্ষে তিনি গ্রহ-নক্ষত্রের এমন একটি মডেল তৈরি করেছিলেন, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঘূর্ণায়মান ছিল।

    ইসলামী দুনিয়া ফিরনাসের নাম ভুলে গেলেও পশ্চিম ভোলেনি। আকাশে উড়তে পারা সেই প্রথম মানুষ হিসেবে চাঁদের একটা উপত্যকার নাম ফিরনাসের নামে নামকরন করা হয়েছে। ইসলামের স্বর্ণযুগে এতো অসংখ্য মনীষার জন্ম হয়েছিলো যে ভাবতে অবাক লাগে। ইসলামী মনীষীদের হাত ধরেই পশ্চিমে হয় রেনেসাঁ। তবে, অবাক করার মতো বিষয় হচ্ছে আমরাও অনেক ক্ষেত্রে ইসলামের এইসব মনীষীদের মনে রাখিনি।

    spot_imgspot_img

    ফলো করুন-

    সম্পর্কিত বার্তা

    জনপ্রিয় বার্তা

    সর্বশেষ বার্তা