spot_img
রবিবার, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪
29 C
Bangladesh
রবিবার, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪
রবিবার, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪
spot_img
আরও
    DinBartaদেশতুলে নেওয়া হয়েছিল সমন্বয়ক নাহিদকে, কী ঘটেছিল
    spot_imgspot_img

    তুলে নেওয়া হয়েছিল সমন্বয়ক নাহিদকে, কী ঘটেছিল

    চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরুর পর থেকেই বিভিন্ন কর্মসূচি দেওয়ার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হতে দেখা যায় তাকে। আন্দোলন যখন সহিংসতায় রূপ নেয় তখন দেশে কারফিউ জারি করা হয়। একইসঙ্গে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়ে যায়। এই পরিস্থিতির মধ্যেই তাকে চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

    তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, কোনো একটি বাহিনী তাকে তুলে নিয়ে যায়। শারীরিক নির্যাতনের কারণে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

    নাহিদ বলেন, ‘আঘাতের কারণে আমার দুই কাঁধ ও বাম পায়ের রক্ত জমাট বেঁধে আছে। শুধু শারীরিক নয়, মানসিকভাবেও নির্যাতন করা হয়েছে আমাকে। আন্দোলনে আমি যাতে নেতৃত্ব বা নির্দেশনা দিতে না পারি সে কারণেই হয়তো আমাকে তুলে নেওয়া হয়েছিল।’

    নাহিদ ইসলামের এই অভিযোগের বিষয়ে বিবিসি বাংলার পক্ষ থেকে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, নাহিদ ইসলামকে আটক বা ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে কিছুই জানেন না তারা।কোটা নিয়ে উচ্চ আদালতের রায়ের প্রতিক্রিয়া, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে সমন্বয় কিংবা ভবিষ্যত কর্মসূচি নিয়েও কথা বলেন তিনি।

    চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ

    গত ২০ জুলাই শুক্রবার মধ্যরাতে নন্দীপাড়ার এক বন্ধুর বাসা থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে শনিবার বিবিসি বাংলার কাছে অভিযোগ করেছিলেন তার বাবা বদরুল ইসলাম।

    রোববার সেখান থেকে মুক্ত হওয়ার পর নাহিদ ইসলাম জানান, তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় ওই বাসার নিচে তিন-চারটি গাড়ি ছিল। সেখানে থাকা একটি প্রাইভেট কার বা মাইক্রোতে তাকে ওঠানো হয়।

    নাহিদ বলেন, ‘সে সময় তিন থেকে চার স্তরের কাপড় দিয়ে আমার চোখ বাঁধা হয় এবং হ্যান্ডকাফ পড়ানো হয়। কিছু সময় পর গাড়ি থেকে নামিয়ে আমাকে একটি বাড়ির রুমে নেওয়া হয়। আমাকে কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং পরবর্তীতে আমার উপর মানসিক ও শারীরিক টর্চার শুরু করা হয়।’

    তিনি বলেন, ‘এক পর্যায়ে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। এরপর আমার কোনো স্মৃতি নাই।’

    নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘রোববার ভোরে চারটা থেকে পাঁচটার দিকে পূর্বাচল এলাকায় আমার জ্ঞান ফেরে। পরে আলো ফুটলে কিছু দূর হেঁটে একটি সিএনজি নিয়ে বাসায় চলে আসি।’

    রোববার দুপুর ১২টায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হন তিনি। আঘাতের কারণে তার দুই কাঁধ ও বাম পায়ের রক্ত জমাট বেঁধে আছে বলে জানান নাহিদ ইসলাম।

    গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে লুঙ্গি পরে এসেছিলেন সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। সেখানেও তিনি অভিযোগ করেন, তাকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে।

    নাহিদ বলেন, পরিকল্পিতভাবে আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে দুর্বৃত্তরা বিভিন্ন ধরনের নাশকতা করে, বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে আগুন দেয় ও জানমালের ক্ষয়ক্ষতি করে। প্রতিবাদী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এসব সহিংস ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই। সরকারের দায়িত্বহীন আচরণ ও দমনপীড়ন নীতির জন্য অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

    নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘সরকার প্রজ্ঞাপন (কোটা সংস্কারের বিষয়ে) দিয়েছে। কিন্তু আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই যে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও কোটা যারা পান, তারা কোটাব্যবস্থার একেকজন অংশীজন। সেই অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা-সংলাপ ছাড়া এ ধরনের প্রজ্ঞাপন সমীচীন নয়। আমরা চেয়েছিলাম সংলাপের মাধ্যমে সব পক্ষের সম্মতির ভিত্তিতে একটি প্রজ্ঞাপন হবে, যাতে নতুন করে আর কখনো সমস্যা তৈরি না হয়। সংলাপের যথাযথ পরিবেশ তৈরি করে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে কোটা সংস্কারের চূড়ান্ত সমাধান আমরা চাই। আমরা সংবিধান অনুযায়ী অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য কোটাব্যবস্থার কথা বলেছিলাম, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য কোটার কথা বলেছিলাম। এই বিষয়গুলো প্রজ্ঞাপনে প্রতিফলিত হয়েছে। কিন্তু অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর বিষয়টির আরও ক্লারিফিকেশন (ব্যাখ্যা) দরকার এবং অংশীজনদের সঙ্গে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সংলাপ প্রয়োজন।’

    এক প্রশ্নের জবাবে নাহিদ বলেন, সরকার এই প্রজ্ঞাপন দিতে যত রক্ত মাড়িয়েছে, যত লাশ পড়েছে, তা অনাকাঙ্ক্ষিত। এর জবাব চান তারা।

    চার দফা দাবি মেনে নেওয়ার পর আট দফা নিয়ে সরকারের সঙ্গে সংলাপের দ্বার উন্মোচিত হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গত কয়েক সপ্তাহের ঘটনায় হতাহতের সঠিক সংখ্যা এখনো পাওয়া যায়নি। অনেক বাবা এখনো সন্তানের লাশ খুঁজে বেড়াচ্ছেন। এত রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আমরা কোটা সংস্কার চাইনি। আমরা সব হতাহতের বিচার চাই। আমাদের চূড়ান্ত দাবি ক্যাম্পাসগুলোতে গিয়ে সবার সঙ্গে আলোচনা করে জাতির সামনে পেশ করতে চাই। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি। আমরা এই পরিস্থিতির অবসান চাই। হতাহতের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’

    (সূত্র : বিবিসি বাংলা ও প্রথম আলো)

    spot_imgspot_img

    ফলো করুন-

    সম্পর্কিত বার্তা

    জনপ্রিয় বার্তা

    সর্বশেষ বার্তা