কুষ্টিয়া জেলার খোকসাতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই এক মুক্তিযোদ্ধাকে দাফন করা হয়েছে। এমন অভিযোগ করেছে সদ্য মারা যাওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা আরজেক আলীর পরিবার। খোকসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের দাবি গেজেটভূক্ত না হওয়ায় তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেয়া হয়নি।
জানা গেছে, খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অবসরপ্রাপ্ত স্যানিটারি কর্মকর্তা আরজেক আলী সোমবার (৯ জুলাই) বেলা ২টার সময় করোনায় মারা যান। তিনি রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার কলিমহর গ্রামের মৃত. আকবর আলী মণ্ডলের ছেলে। পৈত্রিক নিবাস পাংশাতে হলেও দীর্ঘ ৫০ বছর খোকসাতে বাস করেন আসছেন।
তবে তিনি রণাঙ্গণের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। কিন্তুু তারপরও তাকে দেয়া হয়নি রাষ্ট্রীয় মর্যাদা। এমন অভিযোগ করেছেন তাঁর ছেলে মো: আসাদুজ্জামান লিংকন। এ ঘটনায় ক্ষুদ্ধ ওই পরিবার ও এলাকাবাসী।
তিনি বলেন, আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তারপরও তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই দাফন করতে হয়েছে। এটা আমাদের জন্য চরম কষ্টের। এটা গোটা মুক্তিযোদ্ধার অসম্মান।
এ ব্যাপারে কথা বলা হয় খোকসা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মনজিল আলীর সাথে। তিনি বলেন, তিনি আমাদের সাথে চলাফেরা করতেন কিন্তুু গেজেটভূক্ত ছিলেন না। তাই তিনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কোনো সুযোগ-সুবিধা পাননি। শুনেছিলাম হাইকোর্টে এ ব্যাপারে তিনি একটি আপিল করেছিলেন। তবে রায়ের ব্যাপারে কিছু জানি না। যদি হাইকোর্টের রায় জামুকার মাধ্যমে গেজেটভূক্ত হতো তাহলে তিনি রাষ্ট্রীয় মর্যাদা পেতেন।
তবে আরজেক আলীর ছেলে লিংকনের দাবি। তার বাবা আগে গেজেটভূক্ত ছিলেন। কিন্তুু তিনি আওয়ামীলীগ পরিবারের সন্তান হওয়ায় বিগত জামায়াত-জোট সরকার তাকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ দেয়। কিন্তুু এর পরে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় এসেও তালিকাভূক্ত করেনি। বাধ্য হয়ে বাবা হাইকোর্টে একটি আপিল করেন। আর সেটির রায় বাবার পক্ষে। তার মানে বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যা যা সম্মান পাওয়ার দরকার সেটি পাবেন।
খোকসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দীন বলেন, এমন সংবাদ আমার কাছে আসামাত্রই আমি স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাথে কথা বলি। তারা আমাকে জানায়, তিনি গেজেটভুক্ত নয় এবং অতীতেও তিনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কোনো ভাতা পাননি। মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড যদি আমাকে না বলে তাহলে আমি তো রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিতে পারি না। তবে তার প্রতি আমার অতল শ্রদ্ধা রইলো।
তবে এ ব্যাপারে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে এমন কাণ্ডে বেশ ক্ষিপ্ত স্থানীয়রা।